গাজা যুদ্ধ এবং আমাদের উদাসীনতা

post

লেখকঃ মুফতি মারুফ বিল্লাহ ২৩- ১২- ২০২৪ ইং

ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইসরাইলী আগ্রাসনের প্রথম দিকে পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকায় যে করুন পরিস্থিতি ছিল এখন কিন্তু এর থেকে ভয়াবহ অবস্থা চলছে। বাংলাদেশে প্রথম কিছুদিন বয়ান-বক্তৃতা, সভা-সেমিনার এবং মিছিল মিটিংয়ে প্রতিবাদ হয়েছিল। কিন্তু এখন পরিবেশ এমন নিরব-নিস্তব্ধ যে ফিলিস্তিন মনে হয় পূর্ণ স্বাধীন হয়েই গেছে। তাদের জন্য আর কথা বলার যেমন দরকার নাই তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ানোরও প্রয়োজন নাই। অথচ বহির্বিশ্বের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ এর বিপরীত, এক জরিপে দেখা গেছে অমুসলিম রাষ্ট্রে বসবাসরত মুসলিমরা মুসলিম রাষ্ট্রগুলো থেকেও এই বিষয়ে বেশি সোচ্চার। তারা এখন আগের থেকেও বড় বড় সভা-সমাবেশ এবং র‍্যালি করছে। এমনকি এসকল আন্দোলনে ইয়াহুদি-খ্রিষ্টানরাও এই গণহত্যার প্রতিবাদে মুসলমানদের সাথে সমাবেশে শরীক হচ্ছে। পিছিয়ে আছি কেবল আমরাই।

আমরা তো সংবাদ দেখি কিন্তু সময় টিভি বাহিরে বেশি একটা না। আর বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলি নতুন নতুন ইস্যু নিয়ে ব্যস্ত কারণ তাদের ভিউ দরকার। একটু আলজাজিরা আরবি বা ইংলিশে লাইভ দেখলেই বুঝতে পারবেন কিয়ামতের মতো কি ভয়াবহ পরিস্থিতি সেখানে চলছে। মাঝে মাঝে এজন সেজন জিজ্ঞাসা করে ভাই গাজার যুদ্ধ তো শেষ মনে হয়, না ভাই? আপনি জিজ্ঞাসা করতে হবে কেন? সারাদিন তো আমরা মোবাইলটা নিয়েই বসে থাকি। দুনিয়ার সব কিছু সেখান থেকে বের করতে পারি এই খবরটা বের করতে পারি না? ঈমানি প্রশ্নে আমরা এতো উদাসীন কেন ভাই? রসূলে কারীম ﷺ এর সেই হাদিস কি কেবল ইসরাইল ফিলিস্তিন যুদ্ধের প্রথম দিকেই ছিল এখান নাই?

" الْمُسْلِمُونَ كَرَجُلٍ وَاحِدٍ إِنِ اشْتَكَى عَيْنُهُ اشْتَكَى كُلُّهُ وَإِنِ اشْتَكَى رَأْسُهُ اشْتَكَى كُلُّهُ " .

সমস্ত মুসলমান এক ব্যক্তির মত। যদি তার চক্ষু পীড়িত হয় তবে তার সমগ্র দেহ অসুস্থ হয়ে পড়ে। যদি তার মাথা অসুস্থ হয় তাহলে সমগ্র শরীরই অসুস্থ হয়ে পড়ে।(মুসলিম শরীফঃ৬৩৫৩)

এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকার প্রায় আড়াই লক্ষ্য ঘরবাড়ি ইসরাইল ধংস করে দিয়েছে। ২০ লাখের মত মানুষ এই তীব্র শীতের মাঝে খোলা আকাশে তাঁবু টানিয়ে বসবাস করছে। এর মাঝে আবার মুশলধারে বৃষ্টি, আবার ইসরাইলের নরপশুগুলোর আকাশ থেকে অনর্গল বোমা বর্ষণ। যার থেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে আসা আশ্রয় শিবিরগুলোও মুক্তি পাচ্ছে না। ২৫ হাজারের মতো মানুষ শহীদ হয়েছে। তাদের কবরস্থান গুলোওকে তারা মুক্তি দিচ্ছে না বুল্ডোজার দিয়ে সেগুলোকেও ঘুড়িয়ে দিচ্ছে। নীচের যে চবিগুলো দেখছে এটা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে তৈরি কোন দৃশ্য নয় এটাই গাজার বাস্তবতা।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের ভাই-বোনদের রক্ষা করুন। এবং আমাদেরকে গণহত্যা বন্ধ করা এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের সাথে থাকার তাউফিক দান করুন।

আর আমাদের ঈমানি সেই সোনালী চেতনা ফিরেয়ে দেন। এবং ইসরাইলের এই নৃশংস হামলা-মামলা, দমন-নিপীড়ন, দখল দারিত্বের সরাসরি সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বয়কট করার তাউফিক দান করুন।


এই চাকরি শেয়ার করুন:

Write A Comment

    নো কমেন্টস